আরও দেখুন
ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেটের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর মার্কিন ডলার ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটগুলোর বিপরীতে আবারও দরপতনের শিকার হয়। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত হ্যাসেট গতকাল বলেন, আগামী সপ্তাহের নির্ধারিত বৈঠকে ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানো উচিত, এবং তিনি সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর পূর্বাভাস দেন।
"আমার মনে হয় আমাদের এটা করা উচিত, এবং আমি মনে করি আমরা তাই করব," — মন্তব্য করেন হ্যাসেট, তিনি ফেডের গভর্নর এবং আঞ্চলিক প্রধানদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত দেন। তিনি আরও বলেন, "তারা এখন সুদের হার কমানোর দিকে আরও বেশি ঝুঁকছে বলে মনে হচ্ছে।"
হ্যাসেট আরও উল্লেখ করেন যে, তিনি দীর্ঘমেয়াদে সুদের হার আরও অনেক কম দেখতে চান। তিনি ব্যাখ্যা করেন, "যদি ২৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাসের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়—যেটা খুব সম্ভবত ঘটবে—তবে ফেডের কাছ থেকে ভবিষ্যতে মুদ্রানীতি নমনীয়করণের আরও পদক্ষেপ প্রত্যাশা করা যায়।"
তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে, হ্যাসেটের এই মন্তব্যের প্রভাব হয়তো স্বল্পমেয়াদে সীমাবদ্ধ থাকবে। ডলারের মূল্যের ভবিষ্যৎ গতিপথ আসন্ন বৈঠকে ফেডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং নতুন প্রকাশিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের আলোকেই নির্ধারিত হবে। বিনিয়োগকারীরা ফেড কর্মকর্তাদের বৈঠক-পরবর্তী মন্তব্য ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, কারণ সেখান থেকে সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা এবং মুদ্রানীতির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি এবং শ্রমবাজার সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে সবগুলোই ফেডের বৈঠকের পরে প্রকাশের কথা রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত হ্যাসেট ফেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেলে কতবার সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবেন—তিনি এই প্রশ্নের কোনো নির্দিষ্ট উত্তর দেননি। তিনি বলেন, "চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিবেদনের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো এবং বুঝে নেওয়া যে সুদের হার পরিবর্তন করা হলে সেটি মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে।" তিনি আরও যোগ করেন, "প্রেসিডেন্ট কয়েকজন প্রার্থীর কথা বিবেচনা করছেন। এই ধরনের অসাধারণ ব্যক্তিদের তালিকায় থাকা অবশ্যই একটি বড় সম্মানের বিষয়। দেখা যাক কী হয়।"
এই সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০২৬ সালের শুরুতে ফেডের চেয়ারম্যান পদে তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান এবং বলেন, তিনি ইতিমধ্যে একজন সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। গত কয়েকদিনে ট্রাম্প একাধিকবার হ্যাসেটের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁর সম্ভাব্য মনোনয়নের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "আমার বিশ্বাস, পরবর্তী ফেড চেয়ারম্যান ইতোমধ্যেই ঠিক করা হয়ে গেছে।"
টেকনিক্যাল দিক থেকে এখন ইউরোর ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1680 লেভেলে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই মূল্যকে 1.1705-এর লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে পেয়ারের মূল্য 1.1725 পর্যন্ত বাড়তে পারে, কিন্তু বড় ট্রেডারদের সমর্থন ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। দীর্ঘমেয়াদে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.1753 লেভেল নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে যদি পেয়ারের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে পতনের শিকার হয়ে 1.1650-এর কাছাকাছি নেমে যায়, তাহলে সেখানে ক্রেতাদের সক্রিয় হওয়ার প্রত্যাশা থাকবে। যদি ক্রেতারা তেমন সক্রিয় না হয়, তাহলে এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় 1.1625 লেভেলে না নেমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা অথবা 1.1590 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রেও, ক্রেতাদের অবশ্যই এই পেয়ারের মূল্যকে নিকটতম রেজিস্ট্যান্স লেভেল 1.3360 পুনরুদ্ধার করতে হবে। কেবল তখনই মূল্যের 1.3395-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, যা ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়া অনেকটাই কঠিন হবে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3415 লেভেল নির্ধারণ করা যেতে পারে। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 1.3320 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সেই লেভেল ব্রেক করাতে সক্ষম হয়, তবে সেটি ক্রেতাদের বড় একটি ধাক্কা হবে এবং এর ফলে GBP/USD পেয়ারের মূল্য কমে গিয়ে প্রথমে 1.3290 এবং পরবর্তীতে 1.3270 লেভেলে পৌঁছাতে পারে।